Home Blog

বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায়

বিশ্বজুড়ে শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা উদ্বিগ্ন। তবে সরকার এ বিষয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া জানানো কিংবা হুটহাট কোনো কিছু করার কথা বিবেচনা করছে না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ব্যবসায়ীদের সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার নতুন যে শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি ঘোষণা করে, তাতে শ্রমিকের অধিকার হরণ এবং ভয়ভীতি ও নির্যাতনে জড়িতদের বিরুদ্ধে বাণিজ্য ও ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিধান রয়েছে। ব্যবসায়ীরা এটি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা করার কথা বলছেন।

দেশের শীর্ষ কয়েকজন ব্যবসায়ী গতকাল সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি নিয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে জানা।

বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সালমান এফ রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এটি সুনির্দিষ্ট কোনো দেশের জন্য নয়। তিনি বলেন, ‘শ্রম পরিস্থিতির উন্নয়নে আমরা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের ঘোষিত নতুন শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতির বিষয়ে আমাদের আগবাড়িয়ে জানার কিছু নেই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শ্রম অধিকারবিষয়ক স্মারক শুধু বাংলাদেশের জন্য, এটা ধরে নেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশের নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে আন্দোলন এবং শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি ঘোষণার সময়টা মিলে যাওয়া অনেকটা কাকতালীয়।

সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশের শ্রমিকনেতা কল্পনা আক্তারের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। ফলে অনেকে শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতিটিকে বাংলাদেশের জন্য বলে উল্লেখ করছেন, যা আসলে সরলীকরণ। ব্লিঙ্কেন তাঁর বক্তৃতায় স্পষ্ট করেই বলেছেন, বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

কূটনৈতিক একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলেছে, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) এবং সমৃদ্ধির স্বার্থে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক রূপরেখা (আইপিইএফ)—এই দুটি ক্ষেত্রেই উন্নত শ্রমমান নিশ্চিতের বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ফলে বাইডেন ঘোষিত নতুন শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতির সঙ্গে আইপিএস এবং আইপিইএফের সম্পর্ক রয়েছে।

নতুন ওই শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতির সঙ্গে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সংস্থার (এপেক) শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের যোগসূত্র রয়েছে বলেও জানিয়েছে ওই কূটনৈতিক সূত্র। সূত্রটি বলছে, কারণ ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত এপেক শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের ফাঁকে আইপিইএফে যুক্ত দেশগুলো বেশ কয়েকটি দলিল চূড়ান্ত করেছে। ওই দলিলগুলোর মধ্যে শ্রম অধিকার সুরক্ষার বিষয়টিও আছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শ্রম অধিকার সম্পর্ক নিয়ে কাজে যুক্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য এক কর্মকর্তা বলছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শ্রম অধিকারের বিষয়ে যে স্মারক সই করেছেন, সেটি তড়িঘড়ি করে নয়, বেশ কিছুদিন সময় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এটি নির্দিষ্ট কোনো দেশ নয়, সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হবে। ফলে এটিকে নিজেদের দিকে টেনে আনার যুক্তি নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই শ্রম অধিকারবিষয়ক নীতি নিয়ে সরকার কোনো আন্তমন্ত্রণালয় সভার কথা বিবেচনা করছে কি না জানতে চাইলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, এখন পর্যন্ত বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। তবে আইন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিলে সামনের দিনগুলোতে কোনো যৌথ সভার উদ্যোগ নিতে পারে।

টানা ৩ দিন ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয়। ফলে আগামী তিন সারাদেশে বেশ কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

তাপপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রাজশাহী, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে হয়েছে, প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

শেষ ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

তাপমাত্রার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- শুক্রবার (৭ জুন) দেশের উত্তরাঞ্চলের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং অন্য জায়গায় প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শনিবার (৮ জুন) সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রোববার (৯ জুন) দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধ:পতনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা

0

বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতার নাটকীয় অধ:পতনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অনুপ্রবেশকারীদের মতো বিরোধী দল, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়েছে। সুশীল সমাজের নীতি নির্ধারকদের উচিত নতুন করে এক হয়ে নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সোচ্চার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ফ্রিডম হাউসের এক কলামে এই মন্তব্য করা হয়েছে। কলামটি লিখেছেন সংস্থাটির এশিয়া প্রোগ্রামসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নায়লা রফিক। জাস্ট নিউজ বিডির পাঠকদের জন্য লেখাটি অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক তাশফিন চৌধুরী।

পাঠকদের জন্য কলামটির অনুবাদ নীচে তুলে ধরা হলো:

বিগত এক দশকেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক এবং নাগরিক স্বাধীনতার নাটকীয় অধ:পতনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ। জনগণের প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় ঠিক অনুপ্রবেশকারীদের মতো করে আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিরোধী দল, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়েছে, পশ্চাদপদ আইন জারি করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করেছে এবং অভ্যাসগতভাবে সরকার বিরোধী সমাবেশের বাধাগ্রস্থ করতে গলা চেপে ধরার মতো করে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দিচ্ছে। এসব নির্যাতনের ঘটনার কারণে ২০১৪ সাল থেকে ফ্রিডম হাউসের ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়াল্ড’ এবং ‘ফ্রিডম ইন দ্য নেট’ এই দুই সূচকেই অন্তত ১০ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

এই নির্যাতনমূলক পরিবেশের মধ্যেই ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন শেখ হাসিনা। নির্বাচনে কারচুপির ঘটনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ ভিন্ন কায়দায় তার সমালোচকদের ওপর আক্রমণের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়েছে। আর এ কারণে দেশটির দৃশ্যমান ভঙ্গুর গণতন্ত্রের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হচ্ছে এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কাজ করার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।  আওয়ামী লীগের আরও ৫ বছর মেয়াদে কীভাবে কার্যকর পরিবর্তন আনা যায় সে বিষয়ে কাজ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তিন জায়গায় বাংলাদেশের মানবাধিকার আর আইনের শাসনের দ্রুত অবনতি ঘটছে এবং এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসার পথ খোঁজা দরকার।

ভয় এবং সেল্ফ সেন্সরশীপের সংস্কৃতি

বাংলাদেশে সাইবার সিকিউরিটি আইন জারি করে খুব বাজেভাবে অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। এছাড়া কালাকানুন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারিমূলক অনেক আইন এতে পুনরায় যোগ করা হয়েছে। সরকারের সমালোচনা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে বিগত বছরগুলোতে হাজার হাজার মানুষকে এই আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই আইনগুলোর মাধ্যমে ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত সাংবাদিক এবং লেখকসহ প্রায় ৪,০০০ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের ৪০ শতাংশ বিরোধী দল বিএনপি সমর্থিত সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক কর্মী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণঘাতি অস্ত্রের অপব্যবহার নিয়ে ফ্যাক্ট বেইজড রিপোর্ট প্রকাশ করার জেরে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।

এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হচ্ছে ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের চরম উত্তেজনাকর নির্বাচন পূর্ব পরিস্থিতিতে ডিএসএ এবং সিএসএ আইন দুটি জারি করা হয়েছিলো। দুটি আইন জারি করার সময় দেখা গেছে যে, প্রতিশোধ এড়াতে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং অন্যরা এসব আইনের ভয়ে সেল্ফ সেন্সরশীপ আরোপ করেছে। এই প্রতিষ্ঠিত ভয়ের সংস্কৃতির কারণেই ২০২৪ সালে মুক্ত রাজনৈতিক চর্চার পরিবেশ খর্ব করেছে।

সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুসারে সরকার চাইলেই অনলাইনের যেকোনো কন্টেন্ট অপসারণ বা বন্ধ করে দিতে পারে। গণমাধ্যমগুলোকে অব্যাহতভাবে সেল্ফ সেন্সরশীপ আরোপে বাধ্য করা হচ্ছে এবং নিউজ ওয়েবসাইট থেকে রিপোর্ট সরাতে বাধ্য করছে সরকার।

দেশের বাইরে নির্যাতন

মানবাধিকার কর্মীদের নির্যাতনে দেশের বাইরে বিদেশেও তাদের হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শন করছে সরকার। আন্ত:দেশীয় নির্যাতনের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে সরকারের কর্মকর্তারা বিদেশে অবস্থানরত সরকারের সমালোচকদের নির্যাতন করতে সহিংসতা এবং হয়রানিমূলক আচরণ করছে। শেখ হাসিনার ভাষ্যমতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে কেউ যেন রাষ্ট্র বিরোধী প্রচারণা চালাতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে বিদেশে অবস্থানরত রাষ্ট্রদূতদের ২০২৩ সালের জুলাই মাসে নির্দেশনা দেন। দেশের বাইরে সমালোচকদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপব্যবহার করছে সরকার। ফ্রিডম হাউসের তথ্যমতে, বাংলাদেশ হলো ৩৮ দেশের মধ্যে একটি যে দেশ আন্ত:দেশীয় নির্যাতনের শিকারী দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাগুলোকে টার্গেট করা

নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কৌশলে বিভিন্ন এনজিও এর প্রভাব কমাতে এবং কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে বাংলাদেশ এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো প্রজেক্টের অনুমোদন এবং ফান্ডিং বন্ধ করে দিয়েছে। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা কিছু স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিও অভিযোগ করেছে যে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে তাদের ওপর নজরদারি করছে। প্রজেক্ট রেজিস্ট্রেশন বিলম্বিত করা, জব্দ করার চিঠি ইস্যু করা এবং ভিসা না দেওয়া–এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে সরকার। গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশাসনিক কাজ এবং মানবাধিকার ইস্যুতে এনজিওগুলোর ফান্ড আটকে রেখেছে ব্যাংক। এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নিজেদের কাজের পরিধি সীমিত করে নিয়েছে অনেক স্থানীয় এনজিও। আর এর প্রভাব পড়ছে এনজিওগুলোতে দাতারা অর্থায়নে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করেছেন যে, জনসম্মুখে ক্ষমতাসীন দলের নীতির সমালোচনা করায় গ্রেফতারের হুমকি পাচ্ছেন।

এনজিওগুলোর ওপর এই দমনের কারণে বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং শাসন ব্যবস্থা নিয়ে জাতীয়ভাবে যেসব আলোচনার দরকার সে ক্ষেত্রে চরম অবনতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশটিতে কী ঘটছে তা জানার সুযোগ পাচ্ছেনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এই ধারাবাহিকতার রেশ ধরে দেশটিতে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগের জায়গাগুলো কীভাবে কাজ করা হচ্ছে এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব পরামর্শ দিয়েছে তা কার্যকর হচ্ছৈ কীনা সে বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।

ভবিষ্যতে যে পরিকল্পনা নেয়া যায়

সুস্থ গণতন্ত্র এবং সরকারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে অংশীদারদের উচিত তাদের ক্ষমতা দিয়ে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাতে করে সরকার পুনরায় সংস্কারে বাধ্য হয় এবং অধিকতর স্বচ্ছতার সঙ্গে মানবাধিকারের চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে কাজ করে। প্রথমত, আওয়ামী লীগ সরকারকে সিএসএ এর বিতর্কিত ধারাগুলো সংস্কার করতে হবে এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, দেশের জারি করা আইন যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির যেসব প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

অন্তবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে যেসব মামলার বিচার এখনো বাকি রয়েছে সেগুলোর দ্রুত, স্বচ্ছ এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচারের ব্যবস্থা করে দেশটির কর্মকর্তাদের উচিত আস্থা ফিরিয়ে আনা। আর এর জন্য তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এটা না করা হলে বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর তাদের  আস্থা হারাবে এবং এর ফলে রাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জবাবদিহিহীনতার অধিকতর স্বাধীনতা পেয়ে যাবে।

দ্বিতীয়ত, সুশীল সমাজের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদেরকে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সংস্কারে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে নিজেদের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন এনে স্বচ্ছতা, ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতা, উদারতা, রাজতন্ত্র থেকে বের হয়ে নেতৃত্বে ভিন্ন চিন্তার সুযোগ করে দিতে হবে। এটা করতে পারলে তাদের সমর্থন বাড়বে, আন্তর্জাতিক শাস্তি এবং চাপ কমবে, নতুন মেয়াদে যে পরিবেশ তৈরির দরকার তার ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে এবং এমনকি ভিন্নমতের নাগরিকদের নিজেদের সমর্থনের জন্য আকৃষ্ট করতে পারবে। সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিসরে কথা ভাবা উচিত।

আরও স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনের জন্য সুশীল সমাজের উচিত সরকারকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা এবং আন্তর্জাতিক সেরা কার্যক্রমের বিষয় উপস্থাপন করা। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে সিএসএ এর সংস্কার, নতুন এবং বৃহৎ পরিসরের পদক্ষেপের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থার ন্যায্যতা এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের বাজে আচরণের আশংকা ছাড়াই তাদেরকে এ কাজে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দিতে হবে।

শেষ কথা হচ্ছে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দাবি এবং অনুসন্ধানের বিষয়ে অধিকতর পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। উদাহরণ হিসাবে বলতে হয়, যখন কোন দেশ ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় তখন সে দেশের উচিত বর্তমান নেতৃত্বসহ এমন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করা যারা স্পষ্টভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এর বাইরে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং কর্মীদের ওপর সরকারের নির্যাতনের বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি এবং রিপোর্ট প্রকাশ অব্যাহত রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে থাকতে হবে ভবিষ্যত পরিকল্পনা। এ ধরনের পদক্ষেপসমূহে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রভাবিত হবে কীনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার পরও, বিশেষ করে তাদের পিছনে ভারত এবং চীন সরকারের অব্যাহত সমর্থন রয়েছে, এসব যাই থাকুক না কেন পদক্ষেপসমূহ হলো গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

একদিকে, নির্বাচন যেমন অনিশ্চয়তার এক পরিবেশ তৈরি করেছে অন্যদিকে, এটি পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগও সামনে এনেছে। সরকারের উচিত ক্রমাগত সংস্কার পদক্ষেপে মনযোগ দেওয়া এবং সুশীল সমাজের নীতি নির্ধারকদের উচিত নতুন করে এক হয়ে নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

সুত্রঃ ফ্রিডম হাউসের কলাম

সৌদি পৌঁছেছেন ৬৭ হাজার বাংলাদেশি হজযাত্রী

0

পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গেছন ৬৭ হাজার ১৩৮ জন হজযাত্রী।

মোট ১৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। এ তথ্য জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের রাতের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ফ্লাইটগুলোর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ ৯০টি, সৌদি এয়ারলাইন্স ৫৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ২৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ ব্যক্তির সৌদি আরবে হজ করতে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ৩১১ জন।

গত ৯ মে বাংলাদেশ থেকে যে হজযাত্রা শুরু হয়েছিল তার শেষ ফ্লাইট যাবে ১২ জুন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার ১৫ জুন শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিকতা, পরদিন সেখানে কুরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।

সৌদি আরব পৌছে এ পর্যন্ত মোট ১২ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন। সবশেষ বৃহস্পতিবার মক্কায় মারা গেছেন ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল।

সবজিতে আগুন, মুরগি-খাসির দামেও ক্রেতাদের ক্ষোভ

রাজধানীর বাজারগুলোয় বেড়েছে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। সবজি থেকে শুরু করে মুরগি, খাসির মাংস ও মাছের দামেও আগুন লেগেছে। শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

বিক্রেতাদের অভিযোগ, গত দুই দিনের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এর জন্য সরবরাহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন তারা। একারণে সবজির দাম কিছুটা বাড়তি।

বিক্রেতা আশরাফুল বলেন, প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বাড়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা বেশি দামে সবজি আনলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে।

সবজির দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেসরকারি চাকরিজীবী মো. ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে সবজির দাম অনেকটা বেশি। বলা যায়, সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহের ঘাটতির কথা। কিন্তু বাজারে কোনো জিনিসের অভাব দেখছি না। আমার মতে, পরিবহন খরচ বাড়ায় বাজারে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে।

এদিকে গত দুই দিনের ব্যবধানে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, লাল লেয়ার ও খাসির মাংসের দাম। তবে আগের মতোই আছে গরুর মাংসের দাম।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগেও ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া ৩২০ টাকায় বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি আজ বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কেজি দরে। তবে আগের মতোই ৩২০-৩৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগি। সাদা কক বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায় ও সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা কয়দিন আগেও ১১০০ টাকা ছিল। তবে গরুর মাংস আগের মতোই ৭৫০-৭৮০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাসির মাংসের দাম বাড়ার জন্য কুরবানির ঈদের কথা বলছেন বিক্রেতারা। আব্দুল মোতালেব নামের এক বিক্রেতা বলেন, কয়েকদিন পর ঈদ। এখন কিনতে গেলে যে খাসির দাম ৫০০০ টাকা হওয়া উচিত, সেটি অন্য আরেকজন ৭০০০ টাকায় কিনে নিচ্ছে। যে কারণে খাসির দাম বেশি পড়ছে।

তবে আগের মতোই আছে পেঁয়াজ, রসুন, ডিমের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি পাবনার পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রাজশাহীর পেঁয়াজ ৭৮-৮০ টাকা, ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৭৫-৭৬ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি লাল ডিম ৫০ টাকা ও সাদা ডিম ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে চালের দাম। প্রতি কেজি মিনিকেট ৬৬-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৮০ টাকা, মোট আটাশ চাল ৫২-৫৩ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) ৪৮-৫০ টাকা ও স্বর্ণা (পাইজাম) ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি কচুরমুখী ১২০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৮০ টাকা, দেশি গাজর ৭০-৮০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা কাঁঠালের বিচি ৫০-৬০ টাকা, গোল বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, উস্তা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, শসা ১০০-১২০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, কাঁকরোল ৯০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬৫-৭০ টাকা, ধুন্দুল ৬৫-৭০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এই বাজেট কালোটাকার বাজেট: ফখরুল

এই বাজেট কালোটাকার বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সোনালী দল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের উদ্যোগে ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গৃহীত কর্মসূচি বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লব ও পল্লী উন্নয়নের মূলভিত্তি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বাজেট তো হচ্ছে আপনার কালোটাকার বাজেট। কালোটাকা কী করে সাদা করা যায় তার বাজেট। কী করে দুর্নীতি আরও বেশি করে করা যাবে তার বাজেট। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ করা যাবে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে। ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে চুরি সবচেয়ে বেশি সুবিধা। এ কারণে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি। ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে আমাদের অবকাঠামো তৈরি হয়, ঠিক আছে। কিন্তু সেই অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মেশিনের ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। ক্যাপিটাল মেশিনের ওপর ট্যাক্স বাড়ানোর অর্থ কী, অর্থ হলো এখানে যেন ইন্ডাস্ট্রি না হয়।

যন্ত্রপাতি যাতে আমরা আমদানি করতে না পারি। এমপ্লয়মেন্ট কোথায়? মানুষের কর্মসংস্থান কোথায়? মানুষ কাজ পায় না। এই যে ভয়াবহ একটা অবস্থা।

মির্জা ফখরুল বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমাদের এক ভাই বললেন, বে-নজীর বাজেট। বে-নজীর তো সবদিক দিয়েই। বে-নজীর (সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ) আমাদের পুলিশের আইজি ছিলেন। তিনি যা ঘটিয়েছেন তা বে-নজীর। এখন বাজেট হচ্ছে তা বে-নজীর। সাবেক সেনাপ্রধান যা ঘটিয়েছেন তা বে-নজীর। আমাদের সবকিছুই বে-নজীর। এই সরকার মিথ্যার উপরে টিকে আছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ফখরুল বলেন, আজকে যারা শাসকগোষ্ঠী আছে (আওয়ামী লীগ) তারা জিয়াউর রহমানের অবদানকে খাটো করে দেখাতে চায়। কিন্তু উনার যে অবদান, সেটাকে অস্বীকার করলে সত্যকে অস্বীকার করা হবে। যারা শহীদ জিয়াকে অস্বীকার করে তারা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে এবং বাংলাদেশের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে। আর শহীদ জিয়াউর রহমানকে খাটো করতে পারবেও না। এটা সম্ভব না। কারণ জিয়াউর রহমানকে খাটো করতে গেলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে। আর সত্য কিন্তু কখনো চাপা থাকে না কিংবা সেটা মিথ্যায় পরিণত করা যায় না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৭৭, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬,৭০০ জনে

২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলের বিভিন্ন হামলায় অন্তত ৭৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এতে উপত্যকাটিতে গত আট মাসে নিহতের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছেছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতের পাশাপাশি ইসরাইলের নৃশংস হামলায় আরও ৮৩ হাজার ৫৩০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বোমা হামলায় যেসব স্থাপনা পুরোপুরি বা আংশিক ধ্বংস হয়েছে এখনও সেসব ধ্বংসস্তূপের নিচে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফিলিস্তিনি চাপা পড়ে আছেন। যাদেরকে ইসরাইলের অবরোধের কারণে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও তা কার্যকরে রাজি হচ্ছেনা ইসরাইল।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত আট মাসে ইসরাইলের অবরোধের কারণে গাজা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দ্বার প্রান্তে উপনিত হয়েছে। বিশেষ করে গাজার হাসপাতালগুলোতে তেল আবিবের অবরোধে ব্যাপক চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট চলছে। এছাড়া উপত্যকা জুড়ে ইসরাইলের ক্রমাগত বোমা বর্ষণের ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছে গাজার লাখ লাখ বাসিন্দা।

যেসকল ফিলিস্তিনি এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই নারী, শিশু এবং বেসামরিক পুরুষ।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আইনজীবী করিম খান। এছাড়া রাফায় অবিলম্বে হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ওই আদালত। তবে আদলতের নির্দেশ অমান্য করে ক্রমাগত গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।

সরকারের বাজেট দেয়ার কোনও ম্যান্ডেট নেই: খসরু

বর্তমান অনির্বাচিত সরকারের বাজেট দেয়ার কোনও ম্যান্ডেট নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাজেট আর কী, যেখানে একটা অনির্বাচিত সরকার,  যাদের কোনও ম্যান্ডেট নেই বাজেট দেয়ার। কারণ তারা কোনও নির্বাচিত সরকার না, এই ব্যাপারে কারো মনে কোন সন্দেহ নেই। আর বাজেট দেয় কী দিয়ে? একটা দেশের রিসোর্সের উপর ভিত্তি করেই তো বাজেট দেয়া হয়। বাংলাদেশের বর্তমান রিসোর্স কী আছে? ব্যাংক খালি, বাংলাদেশের দেনা বাড়তে বাড়তে কোন জায়গায় গিয়েছে এখন, এখানে দেনা শোধ করতে প্রিন্সিপাল এবং বাজেটের বড় একটা অংশ চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাজেট তো বাংলাদেশের গুটি কয়েক অলিগার্কদের জন্য। এদের ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধার জন্য বাজেট। বাংলাদেশের মানুষের জন্য বাজেট হওয়ার কোনও সুযোগ নেই এখানে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের পকেট থেকে অলিগার্করা চুরি করবে এবং তারা শুধু বিজনেস পলিসি চালাচ্ছে না, তারা পুরো দেশ চালাচ্ছে৷

খসরু বলেন, ব্যাংকিং সেক্টর খালি করে ফেলছে, বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থা খারাপ, ফরেন কারেন্সির অবস্থা খারাপ। মানে যে রিসোর্সগুলোর ওপর ভিত্তি করে বাজেট হয়, বাংলাদেশে তো আজকে সেগুলো অনুপস্থিত। একদিকে একটা অনির্বাচিত সরকার, যাদের কোনও ম্যান্ডেট নেই বাজেট দেবার অন্যদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় তহবিল খালি করে ফেলছে চুরি, দুর্নীতি এবং বিদেশে পাচারের মাধ্যমে

বাংলাদেশের তহবিল খালি, রিজার্ভ খালির পথে, তারপর ব্যাংকগুলো সব লুটপাট করে টাকা সব নিয়ে গিয়েছে, শেয়ারবাজার ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা বিদ্যুৎ চুরি করবে সাধারণ মানুষের বিদ্যুতের বিল দিতে হবে। পানি-গ্যাস সব জায়গায় তাদের পকেট ভরার জন্য, সাধারণ মানুষের পকেট থেকে আসবে সেই টাকা। একদিকে তো কোন রিসোর্স নেই সব খালি করে দিয়েছে, আগামীতে যতটুকু আসবে সেটাতো সাধারণ মানুষের থেকে দিতে হবে এবং তারা আবার লুটপাট করে নিয়ে যাবে।

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী দাবি করে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের উপকার না, এই যে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার পরে টাকা যতটুকু আসবে সেগুলোতো সাধারণ মানুষের পকেট থেকে জোর করে নেবে। আরও বিদ্যুতের দাম বাড়াবে, আরও গ্যাসের দাম বাড়াবে, আরো পানির দাম বাড়াবে, আরো ট্যাক্স দাঁড়াবে এবং জোর করে ট্যাক্স আদায় করবে। সুতরাং এই টাকাটা আবার যাবে তাদের (জনগণ) পকেট থেকে। যতটুকু করবে সেটাতো সাধারণ মানুষের থেকে আদায় করবে তারা (সরকার)।

অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে একটা নির্বাচিত সরকার হতে হবে। একটা মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সকলের সমান সুযোগ থাকতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রাজনীতিতে থাকতে পারে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থনীতিতে থাকতে হবে। তাহলেই জাতির প্রত্যেকটা মানুষের তার নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে,  রাজনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বয়কট

অর্থমন্ত্রীর বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে বয়কটের ঘোষণা দেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। ফলে পুরো সময়ে তিনি আর কোনো কথা বলেননি। শুক্রবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রণালয় আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্য পড়া শেষ হলে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই সাংবাদিকদের পক্ষে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে রেখেছেন। আমরা এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানালেও গভর্নর মানেননি। এজন্য আজ গভর্নরের বক্তব্য আমরা বয়কট করবো। এসময় গভর্নর অর্থমন্ত্রীকে ইশারা দিয়ে বলেন, তিনি বক্তব্য রাখবেন না।

উল্লেখ্য, সাধারণত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের। ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্ট, মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন তিনি। তবে এবার সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান শুরুর আগেই গভর্নরকে বয়কটের ঘোষণা দেন।

এরপর পুরো সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেননি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ অন্যরা।

সংবাদ সম্মেলনের বেশির ভাগ সময় গভর্নরকে গালে হাত দিয়ে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কোনো কথা বলেননি। এরপর সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে উপস্থিত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সরকারের আমলারা তার উত্তর দেন।

দুবাইয়ে গোপনে সম্পদ গড়েছেন ৩৯৪ বাংলাদেশি!

অর্থের উৎস সম্পর্কিত কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়া ছাড়াই ব্যাংকের মাধ্যমে কিংবা ব্যক্তিগত বিমান ভরে অর্থ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা ব্যক্তি, অর্থপাচারকারী ও অপরাধীরা দুবাইয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

‘দুবাই আনলকড’ নামে বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এক প্রকল্পে দুবাইয়ে গড়ে ওঠা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষের এই সম্পদের গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। অনুসন্ধানী এই প্রকল্পে ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা দীর্ঘ ছয় মাস ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছেন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোরের নেতৃত্বে এই অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। মঙ্গলবার ‘দুবাই আনলকড’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ওসিসিআরপি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাডভান্স ডিফেন্স স্টাডিজ (সি৪এডিএস) প্রথম এই ফাঁসকৃত তথ্য পায়।

দুবাইয়ের সরকারি ভূমি দপ্তরসহ অন্যান্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে অনুসন্ধান চালানো হয়। ওসিসিআরপি বলছে, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল নাগাদ দুবাইয়ে বিদেশিদের মালিকানায় থাকা সম্পদের পরিমাণ ১৬০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার তালিকায় শীর্ষে আছেন ভারতীয়রা। ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয় নাগরিকের ৩৫ হাজার সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। দুবাইয়ে ভারতীয়দের এসব সম্পত্তির মোট মূল্য ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বলে ধারণা করা হয়। ভারতের পর এই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানির হাতে ২৩ হাজার সম্পত্তির মালিকানা রয়েছে।

আমিরাতের এই শহরে গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি থেকে শুরু করে বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানেরও গোপন সম্পদের খোঁজ মিলেছে দুবাইয়ে।

এদিকে দুবাইয়ে গোপন সম্পদের বিষয়ে ফাঁস হওয়া তথ্যে কয়েকশ’ বাংলাদেশিরও পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। ওসিসিআরপির তথ্য বলছে, এই শহরে গোপনে সম্পদ গড়েছেন অন্তত ৩৯৪ জন বাংলাদেশি। শহরটিতে এই বাংলাদেশিদের মালিকানায় রয়েছে ৬৪১টি সম্পত্তি। বাংলাদেশিদের মালিকানায় থাকা এসব সম্পত্তির মূল্য ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারেরও বেশি।

তবে বাংলাদেশিদের সম্পদ ও মালিকানার তথ্য জানানো হলেও তাদের বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি ওসিসিআরপি।

সুত্রঃ বাংলা আউটলুক

মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে পয়েন্ট খোয়ালো মায়ামি

0

লীগে টানা ৫ জয়। লিওনেল মেসির ডানায় চড়ে যেন উড়ছিল ইন্টার মায়ামি। তবে মেসি একম্যাচ না খেলাতেই পয়েন্ট খোয়ালো দলটি। হাঁটুর চোটে অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে খেলতে পারেননি মায়ামি অধিনায়ক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে সেই ম্যাচেই কিনা গোলশূন্য ড্র করেছে দলটি। যদিও এই ম্যাচে জিততে না পারলেও লিগে টানা ৮ ম্যাচ অপরাজিত মায়ামি।

মায়ামির জেতা ৫ ম্যাচেই খেলেছিলেন তিনি।  জয়েও রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। মন্ট্রিয়লের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে চোটে পড়েন মেসি। ওই ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে তাকে ফাউল করেন মন্ট্রিয়লের ফুটবলার জর্জ ক্যাম্পবেল। ওই সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হয় তাকে।

চোট গুরুতর না হলেও মেসিকে নিয়ে লীগে চলতি মৌসুমে ১১টি গোল করেছেন লুইস সুয়ারেজ, যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ। মেসি না থাকলেও সুয়ারেজ এদিন শুরু থেকেই খেলেন। ম্যাচের শুরুতে গোলের সুযোগও পান, তবে কাজে লাগাতে পারেননি। ম্যাচের ১০ মিনিটের মধ্যে আরও একটি বড় সুযোগ নষ্ট করে মায়ামি। এবার গোল করতে ব্যর্থ হন রবার্ট টেলর। তবে মায়ামির গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডার যেন গোলপোস্টের নিচে চীনের প্রাচীর হয়ে দাড়ান

৩২তম মিনিটে অরল্যান্ডো সিটির আর্জেন্টাইন উইঙ্গার মার্টিন ওজেডার কাছ থেকে নেওয়া বা পায়ের জোরালো শট রুখে দেন ক্যালেন্ডার। এক মিনিট পরে ফরোয়ার্ড লুইস মুরিয়েলের আরেকটি শট ঠেকান তিনি। দ্বিতীয়ার্ধেও গোল করার কাছাকাছি ছিল অরল্যান্ডো সিটি। ৫২তম মিনিটে ডেভিড ব্রিকালোর হেডও ঠেকিয়ে দেন তিনি।

১৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লীগ সকারের (এমএলএস) ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষে আছে মায়ামি। দুই নম্বরে আছে সিনসিনাটি। ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২৭।

তবে মেসির এত ঘনঘন চোট পাওয়া মায়ামির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। চলতি মৌসুমেই এর আগে বেশ কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে ছাড়াই খেলতে হয়েছে মায়ামিকে। সব মিলিয়ে লীগে মায়ামির জার্সিতে ৫ ম্যাচ মিস করেন মেসি। আগামী মাসে রয়েছে কোপা আমেরিকা, ফলে মেসিকে নিয়ে চিন্তায় পড়তে পারে আর্জেন্টিনাও।