নারী অধিকারের লড়াইয়ে নেমে জুটলো ১১ বছরের কারাদণ্ডের সাজা

0
9

সৌদি আরবে একজন তরুণ নারী অধিকারকর্মীকে তার নিজের পছন্দমতো পোশাক বেছে নেয়া এবং নারীর অধিকারের সমর্থন আদায়ের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আদালত ওই তরুণীকে গোপনে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। সৌদি কর্মকর্তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে দেয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন যে, মানাহেল আল-ওতাইবিকে সৌদি সরকার ‘সন্ত্রাসী অপরাধের’ দায়ে দোষী সাব্যস্ত করার পর ৯ জানুয়ারি গোপনে দণ্ডিত করে। আল-ওতাইবি, একজন ফিটনেস প্রশিক্ষক এবং শিল্পী যিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে প্রায়শই নারী ক্ষমতায়নের প্রচার করেছিলেন, তাকে ২০২২ সালের নভেম্বরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আল-ওতাইবির বিরুদ্ধে ওঠ অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে-পুরুষ অভিভাবকত্বের নিয়মের অবসানের আহ্বান জানাতে- #societyisready-তে প্রচার চালানো। এজন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ তাকে অভিযুক্ত করে। তার বোন, ফৌজ আল–ওতাইবিকেও শালীন পোশাক না পরার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি গ্রেপ্তারের আগে সৌদি আরব থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। আল-ওতাইবির আরেক বোন, মরিয়ম একজন পরিচিত নারী অধিকার আইনজীবী। যিনি দেশের অভিভাবকত্ব বিধির প্রতিবাদ করার জন্য ২০১৭ সালে আটক হন এবং পরে মুক্তি পান।অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ALQST, একটি অধিকার গোষ্ঠী, সৌদি কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে আল-ওতাইবিকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সৌদি আরব সম্পর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রচারক বিসান ফাকিহ বলেছেন, ‘সৌদি কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের বহুল আলোচিত নারী অধিকার সংস্কারের প্রতি ফাঁকা অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে। শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতকে নীরব করার প্রচেষ্টা জারি রেখেছে।’

অ্যামনেস্টি এবং ALQST আল-ওতাইবি প্রসঙ্গে বলে, ‘এই মানবাধিকার কর্মী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘আমূল সংস্কারের একজন সোচ্চার সমর্থক ছিলেন, যিনি  নারীদের জন্য পোষাকের   বিধিনিষেধ শিথিল করেছিলেন।

২০১৯ সালের একটি সাক্ষাত্কারে  রাজকুমারের ঘোষণার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান আল-ওতাইবি। কয়েক বছর পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

এক্স এবং Snapchat-এ আল-ওতাইবির অ্যাকাউন্টগুলি তাকে একজন তরুণ এবং প্রগতিশীল নারী হিসেবে তুলে ধরে, যিনি ফিটনেস, শিল্প, যোগব্যায়াম এবং ভ্রমণ পছন্দ করেন, পাশাপাশি নারীদের অধিকারের জন্য প্রচার করেন। অধিকার গোষ্ঠীগুলি বলেছে, আল-ওতাইবি গুরুতর নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যার শুরু তার জোরপূর্বক নিখোঁজ থেকে শুরু করে, নভেম্বর ২০২৩ থেকে এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত পাঁচ মাস ধরে এই নির্যাতন চলে। তাকে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছিল। শারীরিক নির্যাতনের জেরে তার একটি পা ভেঙে যায়। যদিও সৌদি কর্মকর্তারা এই দাবি অস্বীকার করেছেন। তার মামলাটি অনুরূপ কয়েকটি মামলা অনুসরণ করে যেখানে সৌদি নারীরা বিশেষত, সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার জন্য কঠোর শাস্তির মুখে পড়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সালমা আল-শেহাব, ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ফাতিমা আল-শাওয়ারবি ৪০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সুকায়নাহ আল-আইথান এবং ৪৫ বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত নুরাহ আল-কাহতানি।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here